ফাঁদ
মনের মতো দু’জন বন্ধু! তখনই ভাবলাম, কপাল পুড়েছে। দাদা খনার বচন বলতেন- একে গুণ গুণ দুইয়ে পাঠ, তিনে গোলমাল- চার-এ হাট। আমি খনার চক্করে পড়ে গেলাম। এক বন্ধুর কথায় দ্বিতীয় বন্ধুর রিঅ্যাকশন দেখার উপায় নেই। আবার আমার কথায়- দু’জনের রিঅ্যাকশন এক সাথে দেখারও উপায় নেই। একজনের ঠোঁট কেঁপে উঠতে যাচ্ছে দেখে আরেকজনের দিকে তাকাই। দেখি ওদিকে কপালে তখন আড়াই ভাঁজ। তিন জনে হাঁটছিলাম। দু’জন পিছিয়ে যখন আলোচনা করে, নিজেকে তখন ভিলেন মনে হয়। আমার কপালে পড়ে সাড়ে তিন ভাঁজ।
সেদিন ক্যান্টিনে চা খেতে গিয়ে মোগলাইয়ের অর্ডার দিলেন এক বন্ধু। মোগলাই এলো। মোগলাইয়ের কোণা হলো চার। এই যে এক কোণা বেঁচে গেলো, সেটা ধরবে কে ? একজন সিগারেট, আরেকজন পান। অন্যজন যখন খালি মুখে ঢোক গিলে, তখন কি আর সিগারেটে টান দেওয়া যায় ? এক জনের ঠোঁট লাল, একজনের পোড়া, আরেক জনের ফ্যাকাশে। এক রিক্সায় চড়া যায় না তিন জন। কোনদিন এই বন্ধুর সাথে কোনদিন ঐ বন্ধুর সাথে। আবার কোনদিন তারা দুজন, আমি একা। যেদিন একা হই, বুঝতে পারি এটা প্রায়শ্চিত্য। কোনদিনতো তারাও একা হয়ে যায় !
রাতে শুয়ে শুয়ে চিন্তা করি। এতো অমিল ? তাহলে মনের মতো হয় কি করে ? নাহ্, এ বন্ধুত্ব হয়তো টিকবে না শেষ পর্যন্ত। আরো ভাবি, আমার অনেক ভুল-ত্রুটি ওদের গোচর হয়ে আবার আমারই কাছে ফেরত এসেছিলো। সেগুলোর কাড়াকাড়িনাড়ানাড়িছাড়াছাড়ি চলেছে। সত্যিতো, আমার মধ্যে যে ভুলগুলো ছিলো- তা একজন ভালো মানুষের থাকা ঠিক নয় ! খনার বচন হয়তো এক অর্থে সঠিক, কিন্তু মোগলাই পরোটার চতুর্থ কোণা যখন দু’জন বন্ধুই আমার দিকে ঠেলে দেয়, চোখে খুব জ্বালা করে।
-
সাগর আল হেলাল
No comments