Sagor Al Helal

aa2
  • সাম্প্রতিক লেখা

    পপি একটি জীবনের নাম

    মধ্যপ্রাচ্যের মরুভূমির দেশে চাকরী করছিল কামরান। মরুভূমির মতোই হয়ে গেছে তার মন। একটু ভালোবাসা, একটু আদর মাখা কথা শোনার জন্য ব্যাকুল তার বালুচর মন। পপির মুখটা দেখার জন্য বুকের মধ্যে গঙ্গা-যমুনা অবস্থা। দেশে ফিরছে সে পাঁচ বছর পর। গতকালও কথা হয়েছিলো মায়ের সাথে। মা আজকাল পপির কথা খোলা মেলাই বলে। মায়ের প্রতি তার ভালোবাসা কি এই জন্য বেড়ে গ্যাছে! সে যাই হোক, মা যে শেষ পর্যন্ত পপিকে মেনে নিয়েছে এটাই কামরানের বড়ো প্রাপ্তি। 


    পপি কামরানের খালার মেয়ে। ওভার স্মার্ট। মডার্ন। টম এণ্ড জেরির মতো ঝগড়া লেগেই থাকতো দুজনের। শান্ত স্বভাব কামরানের। প্রথম প্রথম কামরান এই আচরণের জন্য পপিকে পছন্দই করতো না। কিন্তু ধীরে ধীরে বাইরের খোলসটা খসতেই পপির নরম কোমল মনের সন্ধান পায় কামরান। আসক্ত হয়ে পড়ে। পাশাপাশি বাড়ি, পপির ঘন ঘন যাওয়া আসা চোখ এড়ায় না কারো। সূর্যের আলো, চাঁদের কিরণ যেমন গোপন থাকে না- কামরান ও পপির মন দেওয়া নেওয়ার কথাও প্রকাশিত হয়ে যায়। কামরানের মা পছন্দ করতেন না পপিকে। শান্ত নম্র ভদ্র কামরানের জন্য তিনি চান শিক্ষিত, মার্জিত শান্ত-শিষ্ট একটি মেয়ে। ছেলের মতিভ্রম হয়েছে, তাই পনের দিনের মধ্যেই কামরানকে দুবাই পাঠিয়ে দেন তিনি।


    কামরান সন্দেহ করেছিলো প্রথম দিকে। কিন্তু, এখন সন্দেহ কেটে গেছে। মা ফোনে বলছিলেন- পপিকে সামাল দেওয়া কঠিন হয়েছে, সে তোর ঘর ছাড়তেই চায় না। 


    বাড়িতে ঢুকেই কামরানের চোখ পপিকে খুঁজে বেড়ায়। সবাই আছে, কিন্তু পপি? দূরে মলিন আটপৌঢ়ে শাড়ি পরে দুই/আড়াই বছরের একটা বাচ্চা কোলে দাঁড়িয়ে একটা মহিলা। তাকে চিনলো না সে। -মা, পপি? মা চওড়া হাসি দিয়ে বলেন- যা, দ্যাখ গিয়ে- তোর ঘরেই হয়তো আছে। ঘরে ঢুকে কিংকর্তব্যবিমূঢ় কামরান। পপির নাম উচ্চারণ করলে মা যাতে টের না পায়, সে জন্য কামরান তার পোষা বিড়ালের নাম রেখেছিলো পপি। ও ঘরের মধ্যে ঢুকতেই পপি ঘর থেকে দৌড়ে পালায়। কামরান ঘর থেকে বের হয়ে আটপৌঢ়ে শাড়ি পরা মেয়েটিকে আর দেখতে পেলো না।

    -

    সাগর আল হেলাল

    No comments

    Post Top Ad

    Post Bottom Ad

    8-Copy