কি নামে তোমায় ডাকি
কবিতাকে কি নামে ডাকা হবে এ নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে আমার কোন মাথা ব্যথা নেই। কারণ, যে লেখাটি পড়তে ভালো লাগে, আনন্দ পাওয়া যায়- সেটিকেই আমি ভালো কবিতা বলে আখ্যায়িত করবো। তারপর মনে হলে দেখবো সেটা কোন্ রীতি অনুসরণে লেখা। মনে না চাইলে দেখবো না।
সমাজে অনেক সুন্দর নামের মানুষ আছেন। তারা যখন মন্দ কাজ করে, তখন মুরুব্বীরা বলে থাকেন- নামের মানটাও রাখলিনে ? একই ভাবে লেখার রীতি ঠিক রাখতে গিয়ে, যেন তেন কবিতা লেখার পক্ষে আমার মত নেই।
ছন্দের রশি দিয়ে কবিতাকে আটকাতে গিয়ে, অক্ষর গুনে গুনে কবিতা লিখে যদি ভাবাবেগের ব্যত্যয় হয়- সেটা আমি হতে দিতে পারি না। কবি কবিতা লিখবেন, ভালো লাগাবেন- পাঠক নির্ধারণ করবেন, কবি কোন রীতিতে লিখছেন। প্রচলিত কোন রীতিতে তা যদি না মেলে, তাতেও কোন ক্ষতি আছে বলে আমি মনে করি না। পাঠকই সেই লেখার নাম করণ করে দেবে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন- কবিতিকা। যা ছোটো ছোটো ছন্দে লেখা হয়েছিলো। এখন এটাকে কেউ কেউ অণু কবিতা বলছেন। পোস্টে যথার্থই বলা হয়েছে যে, অণুকবিতার চেয়ে ছোট কবিতাকে কি নামে ডাকা হবে ? আসলে, পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে যে সবচে’ বড়ো তার কাছে অবশিষ্ট চার ভাই-ই প্রথম কথায় ছোট ভাই। এ নিয়ে অনেক আলোচনা হতে পারে।
দুই লাইনের লেখাকে, উক্তি বলা হয়ে থাকে বলে আমার যতদূর জানা। প্রবাদ আমরা তাকেই বলবো- যা লোকমুখে প্রচারিত এবং লেখকের নাম অনুপস্থিত।
কবিতা চার লাইন থেকে আরম্ভ করতে পারা যায়। যাকে, কবিতিকা বা অণু-কবিতা যে নামেই ডাকা হোক। তবে চার লাইনের কবিতা ছন্দাবদ্ধ হলে ভালো হয় এটা আমার নিজের মত। কেননা আধুনিক ফরমেটে চার লাইন কবিতা বেশি দুর্বোদ্ধ হয়ে যেতে পারে।
পাঁচ লাইনের লিমেরিকও লেখা যায়। লিমেরিকও ছন্দাকারে লিখতে হয়। ওমর খৈয়াম, কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছেন- রুবাই বা রুবাইয়াত নামে। এটি চার লাইনের এবং ছন্দে।
ছন্দ কবিতার মজাই আলাদা। ছন্দ কবিতায় সহজ ভাষায় দারুণ ভাবাবেগ ও কাব্যময়তা সৃষ্টির সুযোগ রয়েছে। হয়তো অনেকেই একমত হবেন না যে, ছন্দ কবিতা একজন কবি’র জন্য একটা পরীক্ষাগার বলা যেতে পারে। যাহোক, বর্তমানের আধুনিক কবিতাও অনেক এগিয়েছে। বাংলা সাহিত্য ভাণ্ডারে দেশীয় কবিদের রচিত আধুনিক কবিতা কম নয়।
তবে, ভালো রাধুনী হতে হলে যেমন, হরেক রকমের রেসিপি জানা থাকলে ভালো হয়। ভালো লিখতে গেলেও তেমনই। একজন রাধুনী যেমন নতুন রেসিপি বানিয়ে ফেলেন- আর মানুষও তা পছন্দ করতে থাকে। একজন কবিও সৃষ্টি করতে পারেন একটি নতুন ধারার। যদি পাঠকের ভালো লেগে যায়, তাহলে- তা নিয়েও একদিন আলোচনা হয়, হয় নতুন নামকরণ।
-
No comments