Sagor Al Helal

aa2
  • সাম্প্রতিক লেখা

    উৎসর্গ

    উৎসর্গ

    ===============

    তিন বছর বয়স পাড় করেছে জালু গত মাসে। চর্বিযুক্ত নাদুস নুদুস শরীর তার। পাড়ার ওর বয়েসী সবাই তাকে সমীহ করে। এ ধরণের সমীহকে সে খুব এনজয় করে। বাড়ির মানুষেরাও জালুকে বেশ আদর করতো। খাওয়া দাওয়ার কোন কমতি ছিলো না। কাজ কাম তেমন করতে হতো না। বড়ো মিয়া শুক্রবারে মসজিদ থেকে তবারক এনে পুরোটাই ওকে দিতো। তবারক খেয়ে ও আল্লাহ এবং বড়ো মিয়ার শুকরিয়া আদায় করেছে বরাবর।

    হঠাৎই কপাল পুড়লো জালুর। তাকে বাড়ি থেকে বিদেয় করা হবে। কথাটা জানতে পেরে সে অনেক কষ্ট পেলো। এতোদিনের এই হৃদ্যতা, ভালোবাসার কোন দাম নাই ! সে তো তেমন কোন বেয়াদবিও করে নি। তাহলে ? রাতে সে আল্লাহকে অনেক ডাকলো। তবারক এর দোহাই দিলো। চোখের জলে ভাসালো নয়নের দু’কুল। কিন্তু দু:খের বিষয়, কোন তদ্বিরই কাজে আসলো না।

    পরদিন সকাল বেলা এ বাড়ি তাকে ছাড়তেই হলো। নতুন বাড়ির লোকেরা ওর নাম রাখলো দেবা। ও বাড়িতে যাওয়ার সাথে সাথে তারা খুব আদরে ধান-দুর্বা দিয়ে গ্রহণ করলো দেবাকে। বড়ো বড়ো আঁখি লাল পাড়ের শাদা শাড়ি পরা মেয়েটা ওকে একটা চুমুও খেলো। দেবার ফাল দিয়ে নাচতে ইচ্ছে করছিলো। কিন্তু অনেক কষ্টে নিজেকে সংবরণ করলো সে। আর মনে মনে ভাবলো- এমন দু একটা চুমু পাইলে দেবা থেকে দেবদুলাল হতেও আপত্তি নেই তার।

    দেখতে দেখতে ক’দিন চলে গেলো। দেবাকে উৎসর্গ করে কালী মায়ের কৃপা লাভের গল্প শুনে জালু ওরফে দেবা একেবারে চুপসে গেলো। আগামীকালই সেই দিন। কয়দিনের মধ্যে সে যে কয়জন দেব-দেবীর নাম শুনেছে সবার কাছে ফরিয়াদ রাখলো। চোখের জলে বুক ভাসালো। কিন্তু কোন কিছুতেই কোন কাজ হলো না। যখন দেবাকে ওরা বলীকাষ্ঠের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল, তখন সে আকাশের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে বলে উঠলো-

    গরীবের কথা আল্লাও শোনে না, ভগবানও শোনে না।

     সে চিৎকারের ভাষা কেউ বুঝলো কি না, তা বুঝা গেলো না।

    -

    সাগর আল হেলাল

    ০৫.০৪.২০২২

    ==============

    No comments

    Post Top Ad

    Post Bottom Ad

    8-Copy